গাঁয়ের ছোট মেয়েটা সারাদিন খেলে বেড়ায়,
আম, জাম, পেয়ারা গাছের তলায় অবাধে
বয়স হবে কত? এই নয় কি দশ?
বড়ই অবুঝ কোমল নাবালিকা
খেলায় মগ্ন মেয়েটিকে একদিন টেনে এনে,
বিয়ের পিঁড়িতে বসিয়ে দিলো বাবা নামক
হ্নদয়হীন এক মানুষ, মেয়ের বয়স যাচ্ছে বেড়ে
এখন বিয়ে না দিলে যে জাত ধর্ম নষ্ট হবে
বরের বয়স? মাত্র আশি, তাতে কি!!
পুরুষ আশিতেও বাসি হয় না, সোনার আংটি আবার বাঁকা? ওসব কোনো ব্যাপারই নয়,
ভালো করে কিছু বোঝার আগেই, লাল শাড়ী,
সিঁদুর আলতায় সেজে পুতুল মেয়েটি চলে গেলো
স্বামীর বাড়ি।
ফিরেও এলো বাবার কাছে মাস না যেতে এই অপবাদ নিয়ে।
অপয়া মেয়েটি স্বামীকে খেয়েছে
কিভাবে খেলো! স্বামী মারা যাওয়ার অর্থ কি খেয়ে ফেলা?
তারপর? ছোট মেয়েটির কঠোর বৈধব্য অনুশাসন
শুরু হলো, গ্রামের মাতব্বরদের বিধান,
সব রকম আমিষ খাওয়া বারণ, আরো কত বিধি নিষেধ
অবশেষে পাষাণ বাপের চেতনা হলো মেয়ের কষ্ট সহ্য করতে না পেরে সবার বিরুদ্ধে যেয়ে আবার বিয়ে দিলো
কুমারী কন্যার বয়স তখন বিশ এবং বরের বয়স?
মাত্র বাইশ, জোয়ান তাজা প্রাণশক্তিতে ভরপুর
ফুলশয্যার রাতে, বরের পায়ে ধরে অশ্রু সজল নয়নে বললো সাবালিকা
ওগো, আমাকে ভালোবাসতে হবে না
তুমি শুধু দয়া করে মরে যেও না
আমি যে বড় ভালোবাসি; মাছ ভাজা, ডিম
লাল শাড়ী, আলতা ও রঙিন চুড়ি গোছা গোছা।।
লেখাঃ নাজনীন রহমান