চন্দ্রাবতী ষোড়শ শতাব্দীর কবি এবং বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে প্রথম বাঙালি মহিলা কবি৷ এই বিদুষী নারী অন্যান্য কাব্য ছাড়াও পিতার আদেশে বাংলা ভাষায় রামায়ণ রচনা করেছিলেন। পরবর্তীকালে, মৈমনসিংহ গীতিকার এক কবি নয়ানচাঁদ ঘোষ চন্দ্রাবতী চরিতকথা রচনা করেন।
মৈমনসিংহ গীতিকায় তার নিজের রচিত ‘মলুয়া’ গীতিকাব্যে এবং তার জীবনী অবলম্বনে পরবর্তী সময়কার কবি নয়ানচাঁদ ঘোষ রচিত ‘চন্দ্রাবতী’ পালায় তার কথা পাওয়া যায়৷ তার জীবনের ট্র্যাজেডি নিয়ে রচিত লোকগাঁথা শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে অবিভক্ত ময়মনসিংহ জেলার মানুষের মুখে মুখে ফিরে এসেছে৷ তার রচিত রামায়ণ কিছুকাল আগেও ময়মনসিংহ অঞ্চলের মেয়েরা বিবাহোপলক্ষে গান করত। চন্দ্রাবতী নিজের কাব্য ছাড়াও পিতা বংশীদাসের মনসামঙ্গল কাব্যের অনেকাংশ রচনা করেছিলেন।
চন্দ্রাবতীর রচিত কাব্যগুলি হল
- মলুয়া,
- দস্যু কেনারামের পালা (মনসার ভাসান, রচনাকাল: ১৫৭৫ শকাব্দ),
- রামায়ণ(অসমাপ্ত)।
ড. দীনেশচন্দ্র সেন ১৯৩২ সালে চন্দ্রাবতীর রামায়ণ প্রকাশ করেন। লৌকিক মানবিক ও কিছু মৌলিক উপাদান সংযোগের ফলে এই রামায়ণ কাব্যটি বিশেষ মর্যাদা লাভ করেছে। দীনেশচন্দ্রের মতে, মাইকেল মধুসূদন দত্ত তার মেঘনাদবধ কাব্যের সীতা-সরমার কথোপকথনের অংশটি ‘চন্দ্রাবতীর রামায়ণ’ থেকে গ্রহণ করেছিলেন।